হিসাববিজ্ঞান ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স কী? কেন? কীভাবে?

হিসাববিজ্ঞান ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স কী? কেন? কীভাবে?


হিসাববিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণা তথা দু তরফা দাখিলা পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে আপনিও শুরু করতে পারেন একাউন্টিং ফ্রিল্যান্স। Cloud BPO এর আজকের আয়োজনে আমরা জানব একাউন্টিং ফ্রিল্যান্স কি? কেন? এবং কীভাবে ? বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন;

এই ব্লগ থেকে আপরা জানতে পারবঃ

  • ফ্রিল্যান্সিং কী?
  • একাউন্টিং ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং কী?
  • একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং করতে আপনাকে যা জানতে হবে।
  • একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেন গড়বেন?
  • একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কিছু ধাপ:
  • কাজ কোথায় পাবেন?
  • একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং করে করে কত আয় করা যায়?
  • কাদের জন্য একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং ভালো হবে
  •  যারা এ পথে না আসলে ভাল করবেন

ফ্রিল্যান্সিং কী?

ফ্রিল্যান্সিং বলতে বোঝায় একটি স্বাধিন পেশা যেখানে আপনি নিজের মন মত সময়ে ও পারিশ্রমিকে নির্দিষ্ঠ কাজ করার বা না করার অধিকার রাখেন। বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়ায় সবকিছু দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে তেমনি পরিবর্তন হচ্ছে কাজের ধরণ। বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে প্রফেশনাল সার্ভিস প্রায় সবকিছুই মিলছে অনলাইনে। সাধারণত অনলাইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ঠ চুক্তিতে কোন কাজ করে অর্থ উপার্জন করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলে  যিনি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাকে বলে ফ্রিল্যান্সার। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য নির্দিষ্ঠ বিষয়ে দক্ষতা প্রয়োজন। যে কোন বিষয়ের উপর দক্ষতা দিয়েই আপনি ফ্রিল্যান্স শুরু করতে পারবেন। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ ঐ বিষয় ভিত্তিক কাজের উপর ফোকাস করলে আপনি দ্রুত ভালো করবেন। আজ মূলত আমরা একাউন্টিং শিখে কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং করবেন সে বিষয়ে আলেকপাত করব। 

একাউন্টিং ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং কী?

একাউন্টিং এর দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করাই একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং একটা সময় এই ধারণা আমাদের দেশে খুব বেশি শোনা না গেলেও বর্তমানে বহু মানুষ বেসিক একাউন্টিং নলেজ দিয়েই অনেক ভালো রেটে আয় করছেন। একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আপনাকে প্রফেশনাল একাউন্ট্যান্ট হতে হবেনা কেবল বেসিক একাউন্টিং শিখেই আপনি এটি করতে পারেন। কারো যদি SSC/HSC লেভেলের একাউন্টিং কন্সেপ্ট ক্লিয়ার থাকে তাহলে তা তার জন্য যথেষ্ট হবে

একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং করতে আপনাকে যা জানতে হবে।

ব্যাসিক একাউন্টিং সম্পর্কে ধারণা, তবে যারা হিসাববিজ্ঞান সম্পর্কে কিছু জানেন না তারাও চাইলে বেসিক একাউন্টিং টা খুব অল্প সময়ে শিখে কাজ করতে পারবেন।

কম্পিউটার চালনায় প্রাথমিক দক্ষতাঃ কম্পিউটার সিস্টেম পরিচালনা , ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ইমেইল আদানপ্রদান, MS-Office, ফাইল ট্রান্সফার এর মত বেসিক নলেজ থাকলেই আপনি একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারবেন।

ভাষা গত দক্ষতাঃ ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে ইন্টারন্যাশনাল ক্লায়েন্ট ডিল করতে হবে তাই অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে।

হিসাববিজ্ঞান সফটওয়্যারঃ একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং করতে আপনাকে কয়েকটি সফটওয়্যার অবশ্যি জানতে হবে যেমনঃ Quickbook, Xero, Sage, Wave ইত্যাদি তবে শুধু কুইকবুক শিখেই আপনি প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করতে পারেন কারণ বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে কেবল কুইকবেকের উপরেই অনেক কাজ পাওয়া যায়।

একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেন গড়বেন?

ফ্রিল্যান্সিং সহজ কাজ নয়। তেমনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সারের আয় ও কম নয়। এই ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলতে গেলে বলা যায়, একজন সফল ফ্রিল্যান্সারের সফল হওয়ার পেছনের গল্প শুনলে আপনি তাকে ‘লিজেন্ড’ খেতাব দিবেন। কারণ সফলতার পেছনের গল্প আনন্দের হয়না, অনেক স্ট্রাগল থাকে। রাতের পর রাত কোন কাজ শেখা, ইউটিউব টিউটোরিয়াল দেখা, বই পড়া, কাজগুলো প্র্যাক্টিস করা, ধৈর্য ধরে টাকার আশা না করে কাজে দক্ষ হওয়ার জন্য মাসের পর মাস সময় দেয়া, এসব থাকে একজনের সফলতার পেছনে।

 ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার কিছু ধাপ:

  • আগে একাউন্টিং সফটওয়্যার গুলো ভালোভাবে শিখুন তারপর ভেবে দেখুন আপনার এখন যে ব্যাকগ্রাউন্ড, স্কিল এবং ইন্টারেস্ট; সেটার সাথে একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সের মিল পান কিনা।
  • বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সের পোস্ট করা জবগুলো ঘেঁটে দেখুন, বুঝার চেষ্টা করুন এ ধরণের কাজে কী কী স্কিল লাগে।
  • যখন বুঝতে পারবেন আপনার কী কী জানতে হবে তখন সেই স্কিলগুলো শেখার কথা ভাবুন।
  • স্কিল্ড হওয়ার পর এই ফিল্ডে সফল কারও কাছ থেকে পরামর্শ নিবেন পরামর্শ নিন কীভাবে ফিল্ডে ভালো করা যায়।
  • প্রথমেই ‘ভাই, ইনকাম করার সহজ পথ বলেন’ বলে কাউকে ইরিটেট করবেন না।
  • চেষ্টা করতে থাকেন, ফেইল করলে ভুলগুলো শুধরে আবার ট্রাই করেন।
  • যে কাজে আপনাকে এক্সেপ্ট করেনি, সে কাজ নিজেই করুন, সেম্পল প্রজেক্ট হিসেবে প্র্যাক্টিসও হবে, পোর্টফোলিও হবে।

ফ্রিল্যান্সিং করে কত আয় করা যায় চিন্তা না করে স্কিল ডেভেলপ করার দিকে মনোযোগী

কাজ কোথায় পাবেন?

বিভিন্ন মার্কেট প্লেস যেমনঃ Fiverr, Upwork, Freelancer, Peopleperhour, Guru, Toptal, 99designs, Belancer ইত্যাদি মার্কেট প্লেসে লগইন করে প্রথমে আপনাকে একটি প্রফাইল সেটআপ করতে হবে তারপর জব সেকশন থেকে আপনি চাহিদা ও যোগ্যতা অনুযায়ী জব সিলেক্ট করে বিড করবেন। ক্লায়েন্ট আপনার এপ্লিকেশন বিবেচনায় নিলে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। মার্কেটপ্লেস ভেদে জব এপ্লেকিশনে কিছু ভিন্নতা দেখা যায় যেটা আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।

একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং করে করে কত আয় করা যায়?

এখানে আয়ের কোন সীমা নেই আপনি কত আয় করবেন তা নির্ভর করবে আপনার চেষ্টা এবং দক্ষতার উপর অনেকেই মনে করেন, দুই থেকে চার মাস ফ্রিল্যান্সিং করলেই অনেক টাকা আয় করা যায়। এ ধারণা একদম ভুল। ভালোভাবে যেকোনো কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করার সময় প্রথমে আয়ের পরিমাণ খুব কম থাকে। ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কাজ পেতেও অনেক বেশি সময় প্রয়োজন হয়। আর তাই হাতে যথেষ্ট সময় এবং ধৈর্য থাকলেই কেবল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজের চিন্তা করতে হবে।

কাদের জন্য একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সিং ভালো হবে?

  1. যাদের অতিরিক্ত লোভ নেই।
  2. যারা কাজ শেখার ধৈর্য রাখে।
  3. যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার মত কমিউনিকেশন জানে।
  4. যারা শর্টকাটে টাকা আয় করতে চায় না।
  5. যাদের জীবনে কিছু করার প্রবল ইচ্ছে আছে।
  6. যারা সৎ পথে জীবিকা নির্বাহ করতে চায়।
  7. যাদের শেখার প্রবণতা আছে।

যারা এ পথে না আসলে ভাল করবেন:

  1. যারা সবসময় চিন্তা করে ফ্রিল্যান্সিং করে কত আয় করা যায়।
  2. যারা সহজে আয়ের পথ খুঁজছেন।
  3. যারা মনে করছেন শেখা শুরুর ১৫দিন – ১ মাসের মধ্যেই বেহিসাব টাকা আয় করবেন।
  4. যারা ফ্রিল্যান্সিং কে খুব সহজ ভাবেন।

উপসংহারঃ

চাহিদা সম্পন্ন যে কোন দক্ষতা কাজে লাগিয়েই ফ্রিল্যান্সের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে বৃহদায়তন শিল্প ও বাণিজ্যের যুগে একাউন্টিং ফ্রিল্যান্সের চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেসিক একাউন্টিং কন্সেপ্ট ক্লিয়ার থাকলে কতিপয় একাউন্টিং সফটওয়ার শিখে আপনিও বুককিপিং প্র্যাক্টিস শুরু করতে পারেন এক্ষেত্রে Cloud BPO আপনার বিশ্বস্ত সহযোগী হতে পারে। 


No Comments Yet!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

whatsapp